বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনারের পরে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
উইন্ডসর পার্কে রোববার (৩ জুলাই) সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে রভম্যান পাওয়েল ঝড়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র তিন ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসা ওবেদ ম্যাককয়ের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ৪ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ৫ রান।
পরের বলেই বোল্ড আউট হন সাত বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। তিনি ফেরেন ৪ বলে ৩ রান করে। এরপর ক্রিজে নেমে কিছুটা চওড়া হওয়ার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ওডিন স্মিথের বলে তাকে মিড অফে ধরা পরতে হয় ম্যাককয়ের হাতে। সমান এক চার ও ছক্কার মারে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৪ রান। ১১ রানে সাকিব ও ১ রানে অপরাজিত থেকে আফিফ হোসেন ব্যাট করছেন।
এর আগে ইনিংস শুরুর প্রথম ওভারেই তাসকিনকে তুলোধুনা করতে থাকেন মেয়ার্স। সমান এক চার ও ছক্কার মারে তুলে নেন ১৪ রান। পরের ওভারে বল করতে আসা মেহেদীর প্রথম বলেও হাকিয়ে নেন চার। তবে তার ওপর আধিপত্য করতে পারেননি এ ক্যারিবীয় ব্যাটার।
টানা তিন বল পরাস্ত হয়ে, পরের বল স্লোগ সুইপ খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন। আর তাতে তার স্টাম্প ভেঙে দেন মেহেদী। ৯ বল মোকাবিলায় ২ চার ও এক বাউন্ডারিতে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।
পরের উইকেট পেতে বাংলাদেশকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাকিব আল হাসানের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন শামার ব্রুকস। ৩ বল মোকাবিলায় কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন ব্রুকস।
এরপর অবশ্য মাঠের আধিপত্য নিজেদের দখলে নেন ব্রানডন কিং ও নিকোলাস পুরান। দুজনের জুটিতে ভর করে ৭০ পেরিয়ে শত রানের পথে উইন্ডিজ। বোলিংয়ে একাধিক পরিবর্তন এনেও এই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না অধিনায়ক মাহমুউল্লাহ। তাসকিন, মেহেদী, শরিফুল ও সাকিব ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেক হোসেন আক্রমণে এসে বাংলাদেশকে এনে দেন কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে মোসাদ্দেককে স্লোগ সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন পুরান। ৩ চার ও এক ছক্কার মারে ৩০ বলে ৩৪ রান করেন। রিভিউ নিয়ে নিস্তার পাননি পুরান। তাতে ভাঙে ক্যারিবীয়দের ৭৪ রানের হার মানা জুটি। ক্রিজের অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে কিং অবশ্য ফিফটি হাঁকিয়ে নেন।
এরপর ক্রিজে নেমে তাণ্ডব চালান রভম্যান পাওয়েল। ইনিংসের ১৬তম ওভারে বল করতে আসা সাকিবকে তুলোধুনা করে বিশাল তিনটি ছক্কার সঙ্গে একটি চারও হাঁকান। পরের ওভারে আসা তাসকিনের প্রথম বলে তো ছক্কা হাঁকিয়ে বল পার করে দেন স্টেডিয়ামের বাইরে। দ্বিতীয় বলে ছক্কার হাত থেকে নিস্তার পাননি তাসকিন। এ ওভার থেকে আসে ২১ রান।
১৮তম ওভারে আক্রমণে এসে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বল ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ধরা লং অনে ধরা পড়েন সাকিবের হাতে। আর তাতে ৪৩ বল মোকাবিলায় থামে তার ৫৭ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে সাত চারের সঙ্গে আসে এক ছক্কার মার। তবে বিধ্বংসী পাওয়েল ক্রিজে টিকে থেকে মাত্র ২০ বলে ২ চার ও পাঁচ ছক্কায় তুলে নেন ফিফটি।
পরের তিন ওভারে তাকে কিছুটা শান্ত রাখতে পেরেছিলেন শরিফুল ও মুস্তাফিজ। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে শরিফুল তুলে নেন রোমারিও শেফার্ডের উইকেট। তবে পাওয়েলের সঙ্গে ওডিন স্মিথের বিধ্বংসী ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের ইনিংস দুইশ’র কাছাকাছি পৌঁছে যায়। পাওয়েল ২৮ বল মোকাবিলায় ৬ ছক্কার ও এক চারের মারে ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
টাইগার বোলারদের মধ্যে ৪০ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান, সাকিব আল হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন।