সোমবার, ০৮ অগাস্ট ২০২২, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক নারীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত দুই আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই দুই আসামীই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম এলাকার বিশুর ছেলে মোস্তান এবং মোস্তানের ছেলে গোলাম রেজা রোকন।
এদিকে এ মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়ীয়া গ্রামের সাদুর ছেলে কাবুল ওরফে কালু এবং সাতবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আফিল উদ্দিনের ছেলে মিলন কারাগারে রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরের দিকে ওই মামলার রায়ে চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম। এ মামলায় পলাতক দুইজন আসামী মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, দোষী প্রমাণিত হওয়ায় গত বুধবার চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। সেদিন আদালতে দুই আসামী উপস্থিত ছিলেন। অপর দুই আসামি মোস্তান ও রোকন আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
তিন সন্তানের জননী ওই নারী দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আল্লাহর দর্গা গ্রামের একটি সিগারেট ফ্যাক্টরির পাশে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন এবং ভেড়ামারায় একটি ডালের মিলে চাকরি করতেন। সেখানে তিনি প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পর দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ করতেন।
প্রতিদিনের মতো ২০০১ সালের ১২ আগষ্ট বিকেলের দিকে বাসা থেকে কর্মস্থল ভেড়ামারার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পর দিন তিনি বাসায় না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া এলাকায় আকরাম আলীর বাড়ীর পাশে একটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। পরে পরিবারের লোকজন সেখানে যান এবং তার লাশ শনাক্ত করেন। ১৩ আগষ্ট রাতের যেকোনো সময় ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
ভেড়ামারা থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরে মৃতের মা বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে থানার হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ভেড়ামারা থানার এসআই মাকসুদুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়।