বুধবার, ০৬ Jul ২০২২, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন
আমি কিছু দিন যাবত দশজন চুক্তিভিত্তিক সিডিএ নিয়ে কথা লিখছি ফেসবুকে। এতে অনেকেই আমার প্রতি বিরাগভাজন। অনেকে বিরক্ত। আমি আজও লিখতাম না। আসলেই তো ফেসবুকে এসব লিখে কেও কখনও ফল পেয়েছে। মনে হয় না। এটা তো সোস্যাল মিডিয়া, এখানে সবাই আনন্দ করতে আসে।
দুঃখগাঁথার গল্প শুনতে নয়। প্রিয় বন্ধুরা যারা কেরুতে জব করেন বা করে গেছেন। তারা ইতিমধ্যে জেনেছেন বন্ধ মিলের শ্রমিক সমন্বয় হয়েছে। সামনে হয়তো আরো হবে। ক্ষতিটা কাদের হচ্ছে। আমি কেরুর কথা বলতে পারি। এখানকার সব বিভাগে যোগ্যতা সম্পন্ন শ্রমিক কর্মচারীর অভাব নেই, সাদা চুক্তি দিয়ে হোক আর মৌসুমী কর্মচারী দিয়ে হোক। মিল কিন্তু চলছে। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ছয়টি চিনি কল বন্ধ।
প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ঐ সকল মিলের শ্রমিক কর্মচারী চালুকৃত মিলে আনয়ন করতে হবে। সরকারি সিদ্ধান্ত, মেনে নিতেই হবে। হয়তোবা আমরা মেনেও নিয়েছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক, চিনিকল গুলোতে মৌসুমী শ্রমিক কর্মচারী বলে কিছু হতভাগ্য মানুষ আছে। এদের কথা কেও ভাবে না। অনেক উচ্চমহল মৌসুমী কর্মচারী কি জিনিস তাও বোঝে না।
সংক্ষেপে বলি, যে কয়দিন মিল আখ মাড়াই করবে সেই কয়দিন এই হতভাগ্য গুলো কাজ করবে। চাকা বন্ধ ওদের বেতনও বন্ধ। অথচ এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। একি সাথে চাকুরী করে স্হায়ী নামধারী কর্মচারীরা ঠিকই বেতন পাচ্ছে সারা বছর আর মৌসুমী কর্মচারী মাড়াই শেষ হলেই বিদায়।। অনেক আগে রিটেইনশনের ব্যবস্হা ছিলো, রেশন ছিলো। এখন তাও নেই। তাহলে হতভাগ্য মৌসুমী কর্মচারীরা কোথায় যাবে। সদর দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকতাগনও এদের নিয়ে কোন ভাবনা করে না। যতো ভাবনা অফিসার আর স্হায়ী কর্মচারী নিয়ে। এদের প্রমোশন হয়, বদলী হয়। কিন্তু মৌসুমী কর্মচারীদের কিছুই হয় না। সদর দপ্তরের চেয়ারম্যান মহোদয় সহ কারো নজর নেই এদের নিয়ে। অথচ চিনিকলে মৌসুমী কর্মচারীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজ চরম সংকট, বন্ধ মিলের শ্রমিক কর্মচারী চালুকৃত মিলে সমন্বয় হচ্ছে।
অথচ বছরের পর বছর যারা একটু প্রমোশনের আশায় মৌসুমী চাকুরী করছে তাদের কপালে কুঠারওঘাত। আর হবে না স্বপ্নের প্রমোশন। যোগ্যতার পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দশজন চুক্তিভিত্তিক সিডিএ আজ মৌসুমী কর্মচারী হওয়াতে তাদেরও কপালে রক্তের তীলক। কেও মৌসুমী কর্মচারিদের মেনে নিতে পারে না। অফিসার গন স্হায়ী কর্মচারীর বদলী প্রমোশন এক টেবিলে বসে হয়ে যাচ্ছে। অথচ মৌসুমী কর্মচারী হওয়াই চুক্তিভিত্তিক সিডিএ গুলোকেও অন্ধ অজুহাতে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে । হয়তো কষ্ট করে লেখাটাই আমার বৃথা। কেউ এটা পড়বে না। কারো মনে এতটুকু আঁচড় পড়বে না। সারাজীবন দুঃখের দোলাচলে চলবে হতভাগ্য মৌসুমী কর্মচারী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার পর্যন্ত হয়তো লেখাটি যাবে কিনা যানিনা। যদি কাকতলীয় ভাবে যায়। তাহলে কোন চিনি কলে মৌসুমী কর্মচারী নামধারী কাউকে রেখে তার পরিবার টাকে ধবংস করবেন না। এক বা দুই মাসের চাকুরি করে বারো মাস চালানো যায় না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
সবশেষে বলবো হয়তো নতুন করে আবারও কোন মন্তব্য হবে। তবে মন্তব্য করার আগে মানবতার কথা একটু ভাববেন বন্ধুরা। আবেগ দিয়ে নয় অনুভূতি দিয়ে অনুভব করুন। কি দশাই কাটছে প্রিয় প্রতিষ্ঠান কেরু এ্যান্ড কোম্পানির মৌসুমী কর্মচারীদের।।
লেখকঃমহিদুল ইসলাম
মৌসুমি করনিক
কেরু এ্যান্ড কোম্পানি।