শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
মোস্তফা কামাল শ্রাবন, চীফ রিপোর্টারঃ
থেমে গেছে চাওয়া পাওয়া, থেমে গেছে পথ চলা। মাত্র ১ লাখ টাকার বিনিময়ে কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে আন্দোলন। সুনশান নীরবতা নেমে এসেছে আন্দোলন কমিটির সদস্যদের মাঝে। বলছিলাম বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অধীন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পাওনাদির দাবির কথা। শতাধিক কর্মকর্তা অবসরে গিয়েও পাচ্ছে না তাদের গ্রাচ্যুয়িটির টাকা সহ অন্যান্য পাওনাদি। ৪/৫ বছর আগেও যারা অবসরে গেছেন তারাও পাননি টাকা। কেউ কেউ অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। একজন চাকরিজীবি তার জীবনের মূল্যবান সময়টুকু ব্যয় করেন তার কর্মক্ষেত্রে। দীর্ঘ চাকুরি জীবনে অনেক আশা আকাংখা থাকে। অবসরের পর হয়ত কেউ একটু মাথা গোজার ঠায় খোঁজে, কেউ তার সন্তানদের লেখা-পড়া কিংবা বিয়ে দেয়ার চিন্তা করে কিন্তু সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় অর্থের। সেই অর্থ থেকে যদি সে বঞ্চিত হয় তাহলে তার স্বপ্নটা ঝরে পড়ে পাশাপাশি নানান চিন্তায় এক সময় অবসাদে অসুখ- বিসুখে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে পৌছে যাচ্ছে। অবসরপ্রাপ্তদের কয়েকজনকে সম্প্রতি ১ লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। তাও এ সুবিধা মাত্র কতিপয় কর্মকর্তা ভাগ্যে জুটেছে। আর তাতেই আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়েছে। কবে যে সম্পূর্ণ টাকা পাবে অবসরভোগিরা তা নিয়ে সারাটা সময় কাটে অনিশ্চয়তার দুয়ারে দাঁড়িয়ে। কর্পোরেশনে নতুন নতুন চেয়ার ম্যান আসে যায়। তাদের কাছে তুলে ধরা হয় এই মানবেতর জীবন কাহিনী। কিন্তু তারাও সান্তনা দেন সরকার যেদিন দেবেন সেদিন আপনারা পাবেন। কিন্তু সব চেয়ারম্যান তো আসেন কোন মন্ত্রনালয়ের অধীন একজন সচীব পর্যায় থেকে। তিনিও তো এই অসহায়দের আর্তনাদ সরকারের কাছে পেশ করতে পারেন। স্বল্প সময়ের দায়িত্ব নিয়ে এসে তারাও কতটা আন্তরিক জানিনা। আমরা যারা অবসরে আছি তাদের কথা একটিবার ভেবে দেখুন কত বেদনা তারা বয়ে বেড়াচ্ছে। চিনি শিল্প আজ লোকসানের ভারে জর্জরিত। কর্মকর্তা – কর্মচারী- শ্রমিক যারা নিয়োজিত আছে তাদের মাঝেও আতংক বিরাজ করছে। আগামীতে আরো ভয়াবহ বিপর্যয় তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। চলতি রোপণ মৌশুমে চাষীদের মাঝে ঋণ বিতরন যৎ সামান্য করা হয়েছে এতে আগামীতে আখ চাষের উপর প্রভাব পড়বে। কাংখিত আখের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে সব চিনিকলগুলো। কিন্তু এই শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক – কর্মচারী – কর্মকর্তা এবং তাদের লক্ষ লক্ষ পরিবারে নেমে আসবে অমানিশার অন্ধকার। কাউকে ভিক্ষাবৃত্তির মত পেশায় জড়াতে হবে, কাউকে হয়ত বা আত্নহত্যার পথ বেছে নিতে হবে, আরো অনেক নিম্ন পেশায় জড়াতে হবে কাউকে কাউকে। অসৎ পথও অবলম্বন করবে কেউ। তাই সব দিক বিবেচনা করে এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। আর এজন্য যে অর্থের প্রয়োজন হবে তার সংস্থান করে চিনিকল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিন। যদিও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় সংসদে বলেছেন চিনিকল বন্ধ করা হবে না আধুনিকায়ন করা হবে। তারপরও একথার বিশ্বাস পাচ্ছেন না শ্রমিক- কর্মচারীরা। মাননীয় শিল্প মন্ত্রী মহোদয় এবং মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন অবসরে যাওয়া সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের কথা বিবেচনা করে তাদের পাওনাদি পরিশোধের উদ্যোগ নিন।
© All rights reserved © 2020 DailyAmaderChuadanga.com
www.